মিশরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কারফিউ অমান্য করেছে

কায়রোতে আজ তৃতীয় রাতের মতো হাজার হাজার  বিক্ষোভকারী সরকার আরোপিত কারফিউ অগ্রাহ্য  মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনে মুবারকের তিরিশ বছরের শাসনের অবসান দাবি করে চলেছে।
জঙ্গি বিমানগুলো মাথার ওপর দিয়ে চক্কর দিয়ে যায় এবং তখন কায়রোর তাহরির চত্বরে হাজার হাজার লোক, এই সহিংসতায় যারা মারা গেছেন, তাদের জন্যে প্রার্থনা করেন। এই প্রার্থনার পর প্রতিবাদকারীরা আরবীতে চলে যাও, সরে যাও শ্লোগান দিতে থাকে।

মিশরের বিরোধী নেতা এবং জাতিসংঘের সাবেক পরমানূ বিষয়ক প্রধান এল বারাদেই আজ রোববারের এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তিনি আমেরিকান বার্তা প্রতিষ্ঠান সি এন এন এবং সিবিএসকে বলেছেন যে মিশরের জনগণ এবং বিরোধীরা, একটি জাতীয় ঐমত্যের সরকারের ব্যাপারে সম্মত হতে তাকে ম্যান্ডেট দিয়েছে।  তিনি আরও বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে গণতন্ত্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে  অন্যদিকে আবার মিশরের প্রেসিডেন্ট এর প্রতি ও সমর্থন বজায় রেখে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। তিনি বলেন মি মুবারককে, তাঁর কথায় আজই মিশর ত্যাগ করতে হবে।
কায়রোর রাস্তায় বিপুল সংখ্যক  সৈন্য দেখা যাচ্ছে এবং  ট্যাঙ্কগুলি  ব্যাঙ্ক, সরকারী বাসভবন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সদর দপ্তর পাহারা দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীরা সহিংসতা থেকে সুরক্ষার জন্যে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিকে স্বাগত জানিয়েছে।
অন্তত চারটি আটক কেন্দ্রে বিক্ষোভকারীরা, প্রহরীকে কাবু করলে মিশরের নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ব্রাদারহুডের অন্তত ৩৪ জন সদস্য জেলখানা থেকে বেরিয়ে যায়।

এদিকে কায়রো, আলেকজেন্দ্রিয়া এবং মিশরের অন্যান্য শহরে সহিংস বিক্ষোভ গত  মঙ্গলবার থেকে ও অব্যাহত রয়েছে।

মিশর সরকার আল জাজিরা টেলিভিশনের কায়রো বিউরো বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।আল জাজিরা টেলিভিশন ঐ দাঙ্গা সম্পর্কে বিস্তারিত সংবাদ দিয়েছে।এদিকে ওয়াশিংটনে মিশরের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভরত একজন মিশরের লোক,আহমেদ,তার হাতের একটি ফেস্টুনের রেখা তুলে ধরে সে বলছে এতে লেকা আছে মর্যাদা, মুক্তি ও সামাজিক ন্যায় বিচার আমাদের দাবি। মি মুবারকের প্রস্থানের সময় হয়েছে।

ওদিকে ইসরাইল প্রতিবেশি মিশরের গোলযোগ সম্পর্কে এই প্রথম তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মন্ত্রী পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেন ইয়ামিন নেতেনইয়াহু বলেন যে তিনি উদ্বেগ নিয়েই মিশরের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর  রাখছেন। মি নেতেনইয়াহু বলেন এই সময়টাতে ইসরাইলকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতা এবং সংযমের পরিচয় দিতে হবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিন্টান বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় যে মিশরে সুশৃঙ্খল ভাবে গনতন্ত্রের প্রবর্তন ঘোটুক। মিশরে সরকার বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভের ফলে মঙ্গলবারের পর থেকে সেখানে ১০০ র বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিভিশনে এক অনুষ্ঠানে বলেন আমেরিকান সরকার দেখতে চায় না যে এমন কেউ নিয়ন্ত্রন হাতে নিক যার ফলে সে দেশে অবদমন চলবে। তিনি আরও বলেন ওবামা প্রশাসন তাদের এই প্রধান আরব মিত্রকে দেওয়া অর্থ সাহায্য হ্রাস করবে না।

যুক্তরাষ্ট্র ও তুরষ্ক বলেছে তাদের নাগরিকদের তারা, মিশর থেকে অপসারন করা শুরু করবে। কায়রোতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং তুরষ্কের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা অ্যানাটোলিয়া – উভয়ই রবিবার ওই ঘোষণা করে। ইরাক বলেছে মিশর থেকে তাদের যে সকল নাগরিক চলে যেতে ইচ্ছুক তাদের তারা অপসারন করবে।
এর আগে রবিবার, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের মিশর সফরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর দূতাবাসের জরুরী নন সেই সকল কর্মীদের ও তাদের পরিবারদের সেচ্ছায় মিশর ত্যাগ করার অনুমতি দেয়।

 

[Read More]

—–
Source: VOA News: Economy and Finance


 

Comments are closed. Please check back later.

 
 
 
1